Translate

খুকু ভূঞ্যায়ার প্রতিবাদের কবিতা

 



হে অন্ধকার,আলোর শব্দ শোনাও

খুকু ভূঞ্যা


বেশ কিছু মাস আগে স্বপ্ন দেখেছিলাম, একসঙ্গে অনেক চিতা জ্বলছে।

পাতাহীন এক বৃক্ষের নিচে দাঁড়িয়ে দেখছি। অবাক।

সকালে সেই স্বপ্নের কথা মাকে বলতেই মা বলল,

মৃত্যু অথবা আত্মহত্যার চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লে মানুষ এমন স্বপ্ন দ্যাখে।

হবে হয়তো। যাবৎ এসব দুশ্চিন্তা কম করিনি তো।

ঠাকুমা বলতো, ঘুমোবার পুর্বে, ইষ্টনাম  জপ করলে স্বপ্নে আলো আসে।

কোনোদিন সে আলোময় পথ যে দেখিনি তা নয়।

তবুও সবদিন মনে থাকে না। সেই বাঁশী বাজানো ছায়ামুখ কেমন পথের জরাজীর্ণ লোকগুলোর মাঝে হারিয়ে যায়।

কোন্ সে বিলাপ বার্তায় শোকার্ত মন। চোখ ভর্তি অশ্রু নিয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়ি---

 

হঠাৎ যেন চিতা থেকে ছাই উড়ে এলো ভাতের থালায়। অথচ শ্মশানের বুকে আমি তো বসতি গড়িনি। সবুজের ছায়া 

আছে। পাখির কলতান আছে।রোদ জল হাওয়া মাটির নির্মল স্পর্শের কাছে রেখেছি আমার খড়কুটো। তবুও--

কদিন আগে বিলু বেশ কটা কথা বলেছিল।

ঈশ্বর নিয়ে কথা হলো অনেক্ষণ।

 

সে বলল, কোনো মূর্তি পট মন্দির মসজিদে যাওয়ার আগে ব্যক্তির ঈশ্বর সম্বন্ধে সাধারণ ধারণা এবং বিশ্বাসের প্রয়োজন।

প্রতিদিন তুমি বিছানা ছেড়ে মাটিতে পা রাখার আগে করজোড়ে বলো,

হে বসুমাতা--

আমি প্রথম আছড়ে পড়েছি তোমার বুকে। তুমি আমার আশ্রয়। ঈশ্বর। তোমাকে প্রণাম।

অতঃপর,একে একে সূর্য পবন জল মহাকালের দিকে তাকিয়ে করজোড়ে তোমার প্রতিদিনের ঋণ স্বীকার করো।এর 

বাইরে কিছু নেই।

এখানেই সব।

 

বিশ্বাস কর বিলু, আমি ফাঁকি দিতে চাইনি।

আজকাল এত চিতা জ্বলে বুকের ভেতর আত্মমুক্তির বাসনা ক্রমে---

তোর সামনে বসলে পৃথিবীর কোনো অসুখ দেখি না। রামধনু খেলা করে আমাদের শৈশবের ভেতর। কিন্তু কত আর 

আলোর ভালোর কথা বলব,যখন পাশের পাড়ায় মা কাঁদছে সারারাত মৃত ছেলের শোকে।

ধর্ম--ধর্মগ্ৰন্থের বানী কার চরণে রাখি?

যার শোক নেই ভয় নেই?

 

এটা কোন ঋতু যেন?

ওই তো বাঁশপাতা ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে কালো মেঘ। তারপর ভাঙচুর।

ভাঙা পাখির ডিম দেখে এখন আর হাউ করে কেঁদে উঠি না। পাঁজর ভাঙা বৃক্ষ যেন সংসারের অক্ষম পিতা। সেই 

পিতার সন্তান আমরা।

শিকড়ে শ্বাস রেখে টিকে থাকার সংগ্রাম শিখতে হবে।

গুহাবাসীর মতো বেঁচে থাকার তুমুল লড়াই--

 





কোন মন্তব্য নেই

ok

4x6 থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.