কবিতা: নীলোৎপল জানা
21মার্চ বিশ্ব কবিতা-দিবস
- বড়, ভারি মোটেও নয়
- নীলোৎপল জানা
সকালে ঘুম থেকে উঠতেই মা কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেছিল-
'বাবা
দাঁতের ব্যথাটা কমেছে তো?'
এক গ্লাস ঠান্ডা জল নিয়ে যেই মুখে দিয়েছিলাম
সঙ্গে
সঙ্গে মুখ বাঁকিয়ে বলে উঠে ছিলাম 'আ...কী ব্যথা গো মা...'
গায়ে মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে মা বলেছিল- 'যা ডাক্তারের
কাছে যা, যা...এখুনি- '
সিড়ি থেকে নেমে পেপার রুমে সোফায় বসে যেই মাত্র খবরের কাগজে চোখ পড়েছিল
দেখি প্রথম পাতায় এক কোণে-
'মাকে ঘর ছাড়া করে ঘরে আগুন দিল শিক্ষক ছেলে।'
তৎক্ষণাৎ মনটা স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেল আর পত্রিকা পড়া হল না।
এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে আবার ডাইনিং টেবিলে আসতে মা জিজ্ঞাসা
করেছিল- 'কখন যাবি?'
মায়ের দিকে কয়েক মিনিট তাকিয় থেকে হাউহাউ করে কেঁদে
ফেলেছিলা....
আর ভাছিলাম- যে আশ্রয়ে থাকলে পৃথিবীর কোনো শত্রুই যেখান স্পর্শ করতে পারে না
তেমন আশ্রয়ে কেউ আগুন লাগায়?
যে আত্মরস একটু একটু করে ভ্রুণকে মানুষে পরিণত করে
সেই
মাবৃক্ষ আজ মাটিচ্যুত হয় সমাজ গড়ার কারিগরের হাতে!
বাক্য হারা হয়ে যাই একনিমেষে, ঘৃণা জন্মায় নিজের উপর
,ঘৃণা জন্মায় শিক্ষা, সমাজ, পেশার উপর...
করুণা জন্মায় সেই পামর, নরাধমের উপর যে বা যারা...
মা... মা...আমার পৃথিবী সৃষ্টিকারী মা, আশ্রয়, ভালোবাসা….
ছোট্ট শব্দটি তৎক্ষণাৎ পৃথিবীর মতো বড় হয়ে যায় ভারি মোটেও নয়।
কোন মন্তব্য নেই
ok