বাংলা ব্রতে নারী: ড. নীলোৎপল জানা
বাংলা ব্রতে নারী-স্বাধীনতা,বিচিত্র কামনা ও আলপনায় নান্দনিকতার প্রকাশ।
ড. নীলোৎপল জানা
অধ্যাপক, মহিষাদল গার্লস কলেজ
আমরা সকলে জানি বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এখানেই শেষ নয়, এছাড়া বহু বার-ব্রত সংসারে অন্তঃপুরিকাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়, অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি গৃহের নারীদের কথা।
বহু প্রাচীনকাল থেকে বার-ব্রতের প্রচলন
আছে। কিন্তু আমরা এত তলিয়ে ভাবি না, কি এই বার ব্রত? কেনই বা এই ব্রত? ব্রতের উদ্দেশ্যই বা কী?এর উৎস কোথায়? এইসব নানান প্রশ্ন এসে যায়। বর্তমানে
গ্লোবালাইজেশনের যুগেও এর কদর সমানভাবে বয়ে চলেছে। তাহলে
এই ব্রতের মধ্যে এমন কি লুকিয়ে আছে যা আধুনিক মানুষও
এখান থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এই সমস্ত নানান দিক ভাবতে
গিয়ে আমি কয়েকটি দিক আলোচনায় তুলে ধরার চেষ্টা করব ;যেমন
নারীর স্বাধীনতা ,বিচিত্র কামনা ও নারীদের
নান্দনিকতার-প্রকাশ।
ব্রত সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই জানি। তবুও প্রসঙ্গ-ক্রমে আলোচনায় ‘ব্রত’ কাকে বলে সে সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যাক।‘বৃ’ ধাতু থেকে ব্রত শব্দের উৎপত্তি। এর সাধারণ অর্থ ‘নিয়ম’ বা ‘সংযম’।ঋগ্বেদে ব্রত পদটি কর্ম অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে বহুবার। ‘অমরকোষ’এর টীকায় বলা হয়েছে ‘শাস্ত্রবিহিত নিয়ম ও উপবাসাদি লক্ষণান্বিত ধর্মাচরণকেই বলা হয় । ‘বাংলার ব্রত’ গ্রন্থে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন ‘কিছু কামনা করে যে অনুষ্ঠান সমাজে চলে আসছে তাকেই বলি ব্রত।’ অর্থাৎ বলা যায় কোনো কিছু কামনা করে দেবতার কাছে বিশেষ প্রার্থনা জানিয়ে কোনো বিশেষ আচার পালন বা অনুষ্ঠান করা কিংবা পার্থিব কল্যাণ কামনায় দশে মিলে যে সামাজিক নিয়ম বা অনুষ্ঠান পালন করা হয়, তাকে বলা হয় ব্রত। তাই ব্রত হল নিয়ম সংযমের মধ্য দিয়ে কামনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পুণ্য কর্মের অনুষ্ঠান। ব্রত হল কামনার প্রতীক। তাই প্রত্যেক ব্রতেই কামনা সক্রিয় থাকে। সাধারণ লোকের ধারণা যে ব্রত পালন করলে পাপক্ষয় , পুর্ণ্য লাভ হয় । অর্থাৎ ব্রতের মধ্য দিয়ে ইহলৌকিক কামনা-বাসনার প্রকাশ ঘটে। কোনো কোনো ব্রতের সঙ্গে উৎসবের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় কিন্তু উৎসব ও ব্রতের মধ্যে মৌলিক প্রভেদ আছে।
শাস্ত্রের স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে ব্রত উদযাপন এর কথা বলা হয়েছে। স্বয়ং অগ্নি বশিষ্ট কে বলেছিলেন লিঙ্গ নির্বিশেষে ব্রত বিধেয়। ব্রতের দ্বারা সকল ইন্দ্রিয়ের ‘নিয়মন’ হয় বলে এর নামান্তর ‘নিয়ম’।এতে দেবতা পীত হয়ে মুক্তি, ভুক্তি প্রদান করে। তবে ব্রত যদি সকলেরই পালনের কথা হয় তবে সমাজে কেন বদ্ধমূল ধারণা হলো যে, ব্রত শুধুমাত্র মেয়েদের সম্পত্তি? দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দের আর্য সপ্তসতী গ্রন্থ থেকে জানা যায় মেয়েরা হলেন বাড়ির শ্রী (গেহে শ্রীবির)। নারী শিক্ষার প্রচলন যখন ছিল না তখন সময় কাটানো এক কঠিন সমস্যা ছিল মেয়েদের। বর্তমান যুগের মেয়েরা যেমন সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে সেই প্রতিষ্ঠানের গাছের ছায়ায়,বা সিঁড়িতে বসেই দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দেন। অতীতে এরকম ছিল না অথচ ভাব বিনিময়ের জন্য, সংসারের সর্বাঙ্গীন কল্যাণের জন্য অনেক পড়শীর একত্রিত হওয়া জরুরী ছিল। ব্রত উদযাপনের মধ্য দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ হয় বাড়ির মহিলাদের ।আধুনিক বিজ্ঞান বলে শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের ও ততোধিক গুরুত্ব আছে।
আমরা আরো জানি যে প্রাচীনকাল থেকে নারীদের শিক্ষায় বিষয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দ্বিধা ছিল, ব্যতিক্রমী কয়েকটি লক্ষ্য করা যায়(লীলা,অপলা,গার্গী,খনা)। ফলে শাস্ত্র পাঠে তাদের যেমন বাধা ছিল, তেমনি ঘরের বাহিরে গিয়ে শাস্ত্রীয় ব্রতের আচার পালন করা তেমনি কষ্টকর ছিল। অথচ সংসারের প্রচলিত আছে ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে’ তবে কি করে তা সম্ভব? মেয়ে বা নারী যে ভাবেই ধরি না কেন তারা বুঝেছিল অন্তপুরের মঙ্গলকামনায় তাদের গুরুত্ব অধিক। স্বামী যত অত্যাচার করুক না কেন, স্বামী হলেন ভগবান। স্বামীর অমঙ্গল হলে শ্বশুরালয়ে স্ত্রীর আর কোনো কদর থাকে না বা স্বামীর গৃহে অমঙ্গল হলে বধূর উপরে সব দোষ এসে পড়ে । তাই মনে মনে যেমন সংসারের মঙ্গল চিন্তায় তারা ব্যস্ত থাকত, তেমনি আবার নানান ব্রত পালনে পুরুষকে না জানিয়ে সমাপন করতে তাদের আগ্রহ ছিল। কারণ-প্রথমত; তারা যে শুধু অন্তঃপুরে কাজ কর্মে ব্যস্ত থাকে না তা বোঝাতে চেয়েছে। দ্বিতীয়ত; তারা পুরুষ ব্যতিরেকে ব্রত সমাপন করে বাড়ির পুরুষকে চমকে দিতে চেয়েছে। অর্থাৎ তারাও যে অনেক কাজে একাই একশো তা বোঝাতে চেয়েছে ব্রত পালনের মাধ্যমে।
বলা যায়
গৃহের মঙ্গল-কামনা যে তাদের অধিকার ,তারা যে পুরুষকে বাদ দিয়ে বা সাহায্য ছাড়া করতে পারে তা বোঝাতে ব্রত উদযাপন করতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে তা নারীদের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে
পরিণত হয়েছে। এদিক থেকে মনে হয় ব্রতগুলি পুরুষশাসিত
সমাজে নারীদের প্রতিবাদী আন্দোলন। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বিমুক্ত যে নারীকে পরভৃতিকা
রূপে পুরুষশাসিত সমাজ দেখতে অভ্যস্ত বা যে নারী তার নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পুরুষের উপর নির্ভরশীল; সেই নারীই ব্রতানুষ্ঠানে
পুরুষকে ব্রাত্য করেছে। তাই ব্রতে কোনো বাহুল্য দেখা যায় না,নেই আড়ম্বর। কারণ,বাহুল্য দেখাতে গেলে
পুরুষের উপর নির্ভর করতে হবে,বা হতে পারে।; তাই হাতের
কাছে, বাড়ির চারদিকে যা যা পাওয়া যায় তা দিয়েই ব্রত
সমাপন করে নারীরা এবং পুরোহিতের প্রয়োজন হয়না; মহিলারা
এর রূপকার এবং অংশগ্রহণকারী। তাই এখানে মন্ত্রের স্থান নেই ‘ছড়া’
আর ‘কথা’ই এখানে প্রধান, যা মহিলাদের দ্বারা রচিত।
লৌকিক ব্রতে যে সাধরণ উপকরণ ব্যবহৃত হয় তার কতগুলি পরিচিত দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যাক,যেমন - পৌড়া অষ্টমী ব্রত : অগ্রহয়ণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এই ব্রত পালিত হয়।উপকরণ-পড়ুয়া গরুর গোময়,দূর্বা,ধান,আলোাচাল,ফুল,ঘট,লক্ষ্মী খেটিয়ালি,মূলোর চারা,পড়ুয়াদের জন্য নতুন জামা ইত্যাদি।
পৌড়া অষ্টমী ব্রত
পুণ্যিপুকুর ব্রত : এই ব্রতের যে ক্রিয়া তার মধ্যে রয়েছে পুকুর কাটা, তার মধ্যে বেলের ডাল পোতা, জল ঢেলে পুকুর পূর্ণ করা। অশ্বত্থপাতা ব্রত : ৫টি অশ্বত্থপাতা,১টি কাঁচা,১টি কচি,১টি পাকা,১টি শুকনো,১টি ঝুরঝুরে ছেঁড়া পাতা ৫টি পাতা মথায় নিয়ে ব্রতিকে ৫ বার ডুব দিতে হয়। হরিচরণ ব্রত : তামার রেকাবে শ্বেত চন্দন দিয়ে দুটি পদচিহ্ন আঁকতে হয়।এরপর কুমারীরা ভবিষ্যৎ কামনা করে ছড়া বলে। বসুধারা ব্রত : আলপনা দিয়ে ৮টি তারা আঁকতে হয় এবং জল ভর্তি মাটির ঘটকে ফুটো করে বৃষ্টির অনুকরণে তুলসী, পাকুড়, বট,বেল,অশ্বত্থ গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নারীরা কামনা জানিয়ে ছড়া কাটে। সত্যনারয়ণ ব্রত :পূর্ণিমার দিন পালন করা হয়। পুরনারীদের কাছ সত্যনারয়ণ প্রিয় দেবতা।উপকরণ হল-বিবধ ফল,মিষ্টি ও প্রধান হল সিন্নি। আসন তৈরি করতে হয় ৫টি পান ৫টি গোটা সুপুরি ,৫টি হরিতকি, ৫টি পাকা কলা ,১টি পৈতে ,কিছু গুড় ও পয়সা দিয়ে। সুবচনী ব্রত : ঘট, আম্রপল্লব ,পদ্মফুল ,নাড়ু ,পান ,কলা ,সুপুরি, তিল, সিঁদুর, পিটুলি। ইতুব্রত: ইতুব্রত আসলে সেই রবিশস্যের অঙ্কুরোদ্গমের কৃষি উৎসব। তো এই ইতু দেবীর মূর্তি কেমন? না, তেমন মূর্তি নেই।পুরোহিতের প্রয়োজন হয়না । বাড়ির মেয়েরাই পূজা করেন। একটি মাটির সরা লাগে, সরায় মাটি ভরে তার উপরে পাঁচ কলাই ( ছোলা, মুগ,মটর, অড়হর,সর্ষে ) কোথাও আবার ছোলা মটর মুগ তিল যব সহ আট রকমের 'শস্যও ছড়ানো' হয় । ধান শস্য, মান, কচু, কলমীলতা, হীনচে, হলুদ, আখ, শুষনি ইত্যাদির ছোট চারা বা মূল পুঁতে দেওয়া হয়।বাড়ির মেয়েরাই দল বেঁধে ভোরবেলা এইসব গাছের মূল খুঁজতে বেড়ায়। তারপর সংগ্রহ করে এনে স্নান পর্ব সেরে তারা মাটির সরাতে কখনো পুকুরের নিচ থেকে নরম মাটি তুলে এনে গাছের মূল ও দানা শস্য বপন করেন।এই মাটির সরার উপর দুই খানি ঘট জল ভরে রাখা হয়। অঘ্রানে ভোরে প্রতিদিন ও অঘ্রানের রবিবার উপোস করে ব্রতকথা পড়ে পূজা করা হয়।
ইতুব্রত
এই সব উপকরণ সংগ্রহের জন্য কোনো পুরুষ মানুষের উপর নির্ভর করতে হয় না নারীদের;তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন
গো-ব্রত
শাস্ত্রবিহিত
পূজার্চনা নারীস্থান গৌণ, নৈবেদ্য ফলমূল কাটাও
রান্নাবান্না ছাড়া আর কোনো কাজেই মহিলাদের কোনো স্থান
নেই। পুরুষের একচ্ছত্র অধিকারকে যেন চ্যালেঞ্জ জানাতে
মহিলারা লৌকিক ব্রতগুলির
পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মনে হয়। আরো মনে রাখতে হবে আগেকার দিনে অল্পবয়স্কা মেয়ের বিবাহ হত,ফলে
তাদের সংসার নিপুনা হওয়া সহজ ছিল না।
তাই নানান ব্রতের মাধ্যমে সুগৃহিনী হওয়ার শিক্ষা লাভের
সুযোগ ছিল। নিরুপমা দেবী মন্তব্য করেছেন- ‘…সেকালে আমাদের
দেশের বালিকারা ব্রত কথার ছলে শৈশব হইতে… শিক্ষা ও চরিত্র
গঠনের আদর্শ প্রাপ্ত হইত…’।
ব্রতে কামনায়ও স্বাধীনতা
এবার আসা যাক ব্রতের কামনায়। কামনা চরিতার্থতার ক্রিয়া
মানেই ব্রত নয় ,তবে ব্রতের মূলে কামনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্রতিনী তার শ্বশুরালয় এবং পিত্রালয়ের বিভিন্ন আপনজনের দৈহিক ও সাংসারিক কল্যাণ কামনা
চরিতার্থতার জন্য ব্রতের আয়োজন করেন এর মধ্যে কোনো আত্মকেন্দ্রিকতা নেই অর্থাৎ ব্যাক্তিস্বার্থ চরিতার্থতার উদ্দেশ্যে কোনো অনুষ্ঠান হয় না।অনেকে
বলেন মেয়েরা স্বার্থপর,কিন্তু এই ব্রতগুলো তার প্রতিবাদ স্বরূপ।
অবনীন্দ্রনাথ বলেছেন- ‘একের
কামনা প্রবাহিত হয়ে দশের মধ্যে একটি অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে’। তিনি আরো বলেছেন- ‘বিচিত্র অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মানুষের বিচিত্র কামনা সফল করতে চাচ্ছে
এই হল ব্রত’। ব্রতের কামনায়ও
কোনো পুরুষের হস্তক্ষেপ থাকে না। কামনা কিভাবে
প্রকাশ পেয়েছে তার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা যাক।–
পুণ্যিপুকুর ব্রত- এই ব্রত মূলত গ্রীষ্মকালে পালন করা হয়। এই ব্রতের
যে ক্রিয়া তার মধ্যে রয়েছে পুকুর কাটা, তার মধ্যে বেলের ডাল পোতা, জল ঢেলে পুকুর পূর্ণ করা। ব্রতিনীরা যখন এই ব্রত পালন করে তখন
কামনা করে রোদের তাপে পুকুরের জল যেন শুকিয়ে না যায়, বৃক্ষলতার যেন মৃত্যু না হয় এই কামনা
থাকে। এখানে যে ছড়া বলে
ব্রতিনীরা---
পুণ্যিপুকুর পুষ্প মালা
কে পুজবে রে দুপুরবেলা?
আমি সতী লীলাবতী
ভাইয়ের
বোন পুত্রবতী
হয়ে
পুত্র মরবেনা
পৃথিবীতে ধরবে না। ইত্যাদি।
বসুধারা
ব্রত এই ব্রতের প্রধান কামনা
হলো বৃষ্টির আগমনকে অনিবার্য করা। এখানে মাটির ঘট
বা ছোটো হাঁড়ি ফুটো করে গাছের মাথায়
জল ঢালা হয়। এর ফলে বাস্তবেও বৃষ্টিপাত হবে এবং বৃক্ষাদি
সিক্ত হবে। এই ব্রত পালন করা হয়
বৈশাখ মাসে। এই ব্রতের ছড়া হল—
গঙ্গা গঙ্গা ইন্দ্র চন্দ্র বরুণ বাসুকি
তিন কুলে
ভরে দাও ধনে জনে সুখী।
ধরিত্রীকে উর্বর করার জন্যই এই ভাবে বৃষ্টি কামনা করা হয় ।এইভাবে মাঘমন্ডল ব্রত পালন করা হয় শীতকালে সূর্যকিরণ বেশি পরিমাণে পাওয়ার জন্য। আবার তোষলা ব্রতে কামনা জানানো হয়
যাতে বসুন্ধরা শস্যপ্রসূ হয়ে ওঠে। ষষ্ঠী ব্রতে নারী নিজের জন্য কিছু কামনা
করে না, সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করে। গরু-বাছুর ঝি চাকর পশুপাখি ছেলে-মেয়ে, বউ নাতি-নাতনি সকলের মঙ্গল কামনা করা হয় –
জ্যৈষ্ঠ মাসে অরণ্য ষষ্ঠী
ফিরে ঘুরে এলো ষাট
বারো মাসে তেরো ষাট
ষাট ষাট ষাট।।
ঝি চাকরের ষাট
গরু বাছুরের ষাট
কর্তার ষাট, ছেলে- মেয়েদের ষাট
বউ ঝিএ ষাট, নাতি-নাতনীর ষাট
ষাট ষাট ষাট।
এই ব্রতের
মত তুষতুষলি ব্রতেও কামনার প্রকাশ দেখা যায়। যেমন--
কোদাল কাটা ধান পাব
গোয়া আলো গরু পাব
দরবার আলো বেটা পাবো
সভা আলো জামাই পাব
তোমার কাছে মাগি এই বর
স্বামী পুত্র নিয়ে যেন সুখে করি ঘর।
আবার শিবরাত্রি
ব্রত করা হয় নারীর পতি কামনা, পুত্র কামনায়, বৈধব্য খন্ডন, সাংসারিক মঙ্গলকামনায়। এই
কামনার মধ্য দিয়ে সকল বিবাহিত নারীর কামনা প্রকাশিত। লক্ষ্মী ব্রতের মাধ্যমে
তিনি কামনা করেন লক্ষ্মী যেন গৃহত্যাগী না হয়।তাই বাইরের
দরজা থেকে গৃহাভ্যন্তর পর্যন্ত লক্ষ্মীর পদচিহ্ন অঙ্কন করা হয় ।এছাড়া নানা আলপনা দেওয়া হয়--মরাই, মাছ, পুকুর, নানান
অলংকার ইত্যাদি যাতে বাস্তবে তা পাওয়া যায়। (ছবি)
অগ্রহায়ণ মাসে অনুষ্ঠিত হয় আলপনা ব্রত। এই ব্রতের
কামনার ছড়া হল-
ঢেঁকি পড়ন্ত,উনুন জ্বলন্ত
বাপ ঘর শ্বশুর ঘর ভরন্ত, পুরন্ত।
তুসতুসলা ব্রতে কামনা করা হয়েছে---
বাপ মার ধন নাড়ি চাড়ি
শ্বশুরের ধনে রাজ্য করি।
সেঁজুতি
ব্রত বাবা-মা ও স্বামীর ধন সম্পত্তি বাড়ার কামনা করা হয়েছে। হরিচরণ ব্রতে ব্রতিনীর ঐহিক কামনা
বাসনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ লক্ষণীয়—
“আপনাকে
সুন্দর চায়, রাজরাজেশ্বরী স্বামী চায়।
গুণবতী ঝি চায় সভা উজ্জ্বল জামাই চায়।
অমর বর পুত্র চায়, গিরিরাজ বাপ চায়।
মেনকার
মতো মা চায়, দুর্গার মত আদর চায়
রামের মতো পতি, সীতার মতো সতী
আলনা ভরা কাপড়, মরাই ভরা
ধান
গোয়াল ভরা গরু, পাল ভরা মোষ
পায়ে আলতা, মুখে পান
পট্ট বস্ত্র পরিধান।”
ইতু ব্রতে ব্রতিনীর কামনা হল—
নির্ধনের ধন হয়
অপুত্রের পুত্র হয়
আইবুড়োর বিয়ে হয়
অস্মরণের স্মরণ হয়
অন্ধের চক্ষু হয়।
বা --- হিংচে কলমি ল-ল করে
রাজার
বেটা পক্ষী মারে…
মারুক
পক্ষী উড়ুক চিল
সোনার
কৌট ,রূপার খিল।
খিল
খুলতে লাগলো হাতে ছড়
আমার
বাপ ভাই হোক ধনেশ্বর।
ওঁ
ইতু লক্ষ্মী দেব্যায় নমঃ
ওঁ সূর্য দেব্যায় নমঃ
এটি মূলত সূর্য ব্রত। এই ব্রত ভারতের নারী সমাজের প্রধান ব্রত।সূর্য নারী শক্তির অধার। সূর্যের আশীর্বাদে নারী সন্তান লাভ করে।সূর্যের অভিশাপে নারী বন্ধাত্ব প্রাপ্ত হয়। সুতরাং সূর্যকে প্রসন্ন করলেই সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা রক্ষা হবে।
ব্রতের এই ছড়াগুলিতে অকপট কামনার প্রকাশে জীবন্ত হয়ে উঠেছে । এই ছড়াগুলো তে কোনো মিথ্যাভাষণ নেই ,আছে কঠোর বাস্তবতাবোধ। এই ব্রতগুলোতে শুধু পতিকূল পিতৃকুলের কল্যাণ নেই, একটু সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যায় বিশ্ব জনীন কল্যাণ কামনাই এখানে ব্যক্ত হয়েছে এবং নারীদের উদার মানসিকতা ও কল্যাণময়ী জননীর চিত্র যেমন ফুটে উঠেছে,তেমনি নারী স্বাধীনতাও প্রকাশিত। বিভিন্ন কামনা যুক্ত আরো কিছু পরিচিত ব্রতের উদাহরণ তুলে ধরা যাক—
বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত-- সেঁজুতি ব্রত,ভাদুলি
ব্রত,নৌকাপূজা, ইত্যাদি
সাংসারিক মঙ্গল কামনাযুক্ত ব্রত—শিবরাত্রি, জন্মাষ্টমী,সাবিত্রী,শ্রীপঞ্চমী
ব্রত ইত্যাদি
সন্তানের
মঙ্গল কামনা-ষষ্ঠী ব্রত জিতাষ্টমী ব্রত
ভ্রাতার মঙ্গল কামনায়-- ভাতৃদ্বিতিয়া
(ছবি)
ধন
সম্পদ বৃদ্ধি বিষয়ক—লক্ষ্মীব্রত, (ছবি)
বৃষ্টিকামনা বিষয়ক—পুণ্যিপুকুর, বসুধারা ব্রত ,
পিঠাকামনা বিষয়ক –পৌষ-সংক্রান্তি ব্রত
ব্রতের নান্দনিকতায়ও নারীদের স্বাধীনতা
প্রাচীনকাল থেকে মানুষ শিল্প
সচেতন তার পরিচয় পাওয়া যায় গুহাচিত্রের মধ্য দিয়ে এই শিল্প চেতনার মানসিকতা
থেকে আলপনার সৃষ্টি আলপনার মধ্যে জাদু বিশ্বাসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। আলপনা শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত ‘আলিম্পন’ শব্দ থেকে, আবার আলপনার ব্যবহার হিন্দুদের
মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আলপনা দেওয়ার
বিভিন্ন রীতি এবং অঞ্চলভেদে এর নাম বিভিন্ন। যেমন বিহারে
বলা হয় অরিপন, গুজরাটে সাথিয়া,
মধ্যভারত- রাজস্থানে মণ্ডন,মহারাষ্ট্রে
ও উত্তরপ্রদেশে রঙ্গলি,
অন্ধ্রপ্রদেশে মুঙ্গলি, তামিলনাড়ুতে কোমল, আমাদের পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় বলা হয় ঝুটি যার সঙ্গে ওড়িশার সম্পর্ক আছে। আবার আমাদের পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশাতেও রঙিন
আলপনা দেওয়ার রীতি আছে। এই রঙিন আলপনাকে মূলত রঙ্গলি বলা হয়।
|
|
এই আলপনা সাধারণত ঘরের উঠোনে ,মেঝেতে দেওয়া হয় । গৃহের সাধারণ উপকরণ দিয়ে আল্পনা দেওয়া হয়।মূলত আলো চালের গুঁড়োর সঙ্গে জল মিশিয়ে গোলা তৈরী করে পাতলা কাপড়ের টুকরো বা পাটের তুলি বা আঙুল দিয়ে বাড়ির মহিলারা আলপনা আঁকেন। আলপনার রঙ মূলত সাদা,তবে রঙিন আলপনা দিতে গেরু মাটি ব্যবহারের রীতি আছে, আবার লাল রঙের জন্য সিঁদুরের ব্যবহার, কালো রঙের জন্য কাঠকয়লার গুঁড়ো ও কমলা রঙর জন্য শিউলি ফুলের ডাটা ব্যবহারের রীতি আছে। আলপনা আসলে মঙ্গল চিত্র। যে কোনো অনুষ্ঠানে আলপনা দেওয়ার রীতি চলে আসছে।
এই আলপনা অঙ্কনে
বঙ্গললনাদের শিল্প মনের পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্গ নারীরা নীপুর
হস্তে শুধু মাত্র অঙ্গুলি সঞ্চালনে অপূর্ব সুন্দর আলপনা অঙ্কন করেন। এই আলপনাকে
নারী সৌন্দর্য-চেতনা ও মনের
দর্পণ বললে ভুল হবে না । বাঙালি রমনীরা জাত শিল্পী। এই শিল্পবোধ জন্ম থেকেই লব্ধ।কর্ণের কবচকুণ্ডল এর মত মজ্জাগত। এজন্য তাকে শিক্ষানবিশি করতে হয় না বা কোনো আর্ট স্কুলে নাম লেখাতে হয় না। জন্ম
পরম্পরায় বাঙালি রমণী তার পূর্বসূরিদের দেখে শেখে। ‘বাংলাদেশের লোকশিল্প: আলপনা’ গ্রন্থে রফিকুল আলম বলেছেন—“প্রথমত, আলপনা মহিলারাই সব জায়গাতেই এঁকে থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় আলপনা একটি পাড়া বা মহল্লার মহিলাদের যৌথ
প্রয়াস ।দ্বিতীয়ত,
আলপনা কখনোই পেশাদার শিল্পী দিয়ে আঁকা হয় না, সবাই
এখানে শৌখিন।”
এই আলপনা বাংলার ব্রতের একটি বিশেষ অঙ্গ । আলপনার নকশায় নারী মনের কামনাগুলি মূর্ত হয়ে ওঠে। আলপনার মধ্যে প্রতীকের ব্যবহার দেখা যায়। এই প্রতীকগুলি যাদুবিশ্বাসজাত বলে মনে হয় । ডক্টর পল্লব সেনগুপ্ত ‘লোকসংস্কৃতির সীমানা ও স্বরূপ’ গ্রন্থে বলেছেন—“আদিম শিল্পকলার সঙ্গে জাদুপ্রীতির যেমন যোগ ছিল তেমনই এর ধর্ম বিশ্বাসের একটি ভূমিকা এখানে সুপ্রতিষ্ঠিত।” লোকশিল্পের প্রথম অভিপ্রায় হলো ব্যবহারিকতায়; নান্দনিকতার চিন্তা হল তার পরবর্তী স্তর।
আলপনা মধ্যে লুকিয়ে আছে আকাঙ্ক্ষা ও বাসনা যা আদিম জাদু বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। শিকারের ছবি আকলে বাস্তবে অনুরূপ শিকার করা সহজ হবে; এই ধ্যান-ধারণা আলপনার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। ধানের ছড়া আঁকলে ফসল ক্ষেত্রে ধান উপছে পড়বে, মাছ ভর্তি পুকুর আঁকলে পুকুর মাছের ছানায় ভর্তি হবে , চলন্ত গাছ, উড়ন্ত পাখি, বাড়ি গাড়ি ইত্যাদির ছবি আলপনায় ফুটিয়ে তুললে বাস্তব ক্ষেত্রে অনুরূপ পরিবেশ তৈরি হবে,এগুলোকে ঠিক নন্দনিকতার মধ্যে ধরা যায় না।
আলপনার মধ্যে বৃত্তাকার রেখার ব্যবহার বেশি। এই আলপনা আঁকার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় সংস্কৃত ‘কাদম্বরী’ ও ‘তিলকমঞ্জরি’ গ্রন্থ গ্রন্থটিতে। এছাড়া মৈমনসিংহ গীতিকার কাজল রেখা পালায় আলপনা অঙ্কনের কথা আছে। ব্রতের আলপনাগুলির মধ্যে বঙ্গললনাদের শিল্পকলার যতই পরিচয় থাক না কেন, তার মধ্যে মটিফ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- অলংকার ,ফুল, লতা-পাতা, লক্ষ্মীর ঝাঁপি, ধানের শীষ, পালকি, পাখি, হাতি, ঘোড়া ,ঢেঁকি, চিরুনি ,সূর্য, কলাগাছ, মাছ ,হাতের ছাপ ইত্যাদি।এগুলোর আঁকার মধ্যে নানান তাৎপর্য লক্ষ্য করা যায়। বাংলার ব্রতে আলপনা অঙ্কনে নারীরাই মুখ্য স্থান গ্রহণ করেন। কারণ তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটে আলপনার বিবিধ চিত্রের মধ্যে ,কামনাবিষয়ক আলোচনায় পূর্বে বলেছি।
‘বাংলার ব্রত’ গ্রন্থে অবনীন্দ্রনাথ আলপনা কে দুটি ভাগ করেছেন। প্রথমত, অক্ষর বা চিত্র মূর্তি যা ইজিপ্টের চিত্রের মত। যেমন নানা অলংকার কামনা ঘরবাড়ি, সূর্য, চন্দ্র, গাছ ইত্যাদি ।যাকে শিল্প কার্য বলে ধরা যায় না, এগুলো হলো মানচিত্র। দ্বিতীয়ত, যেখানে পদ্ম মানুষের কল্পনা থেকে সৃষ্টি বা কলালতা ,চালতা লতা, খুন্তিলতা, শঙ্খলতা ইত্যাদি লতামণ্ডন বা আসনের পিঁড়িচিত্র, এগুলো হলো শিল্পকার্য। এগুলোর মধ্যে আর যা-ই থাক এগুলো হল হৃদয়ের আবেগ তাড়িত শিল্পবোধ।শিল্পের সৃষ্টির মূলে মানুষের মনে তীব্র আবেগের প্রয়োজন তবে সব আবেগ শিল্প নয়। বাস্তবে পদ্মফুল টিকে দেখে আরো মনমুগ্ধকর পদ্ম আঁকলেন শিল্পী, সেখানে পারফেকশন আছে কিন্তু তাকে শিল্প বলা যাবে না; তা আর্টিস্টের আঁকা চিত্র। কিন্তু যখন কোনো নারী তার পিটুলি দিয়ে পদ্ম আঁকলেন কিন্তু একেবারে নিখুঁত নয় অথচ মনের আবেগ ধরা পড়েছে তখন তা হলো শিল্প, যা নান্দনিকতায় ভরা। বন্ধুর আগমনে আমার ঘর সাজাযই, এখান থেকেই শিল্পের শুরু। কামনার তীব্র আবেগ এবং তার চরিতার্থতার মাঝে যে প্রকাণ্ড বিচ্ছেদ এবং সেই বিচ্ছেদ ভরে উঠেছে নানা ক্রিয়া, নান ভাবে নানা রসে; এখান থেকেই নান্দনিকতার শুরু। খাঁচার মধ্যে সিংহ আর আমরা বাহিরে দাঁড়িয়ে তার সৌন্দর্য উপভোগ করছি। কিন্তু খাঁচার বাহিরে সিংহাসনে সামনে দাঁড়িয়ে তার সৌন্দর্য ভাবতে পারিনা, কারণ সেখানে ভয় কাজ করে। আমরা পালাতে ব্যস্ত থাকি অর্থাৎক্রিয়ার মাঝখানে অবসর খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই অবসরে শিল্প সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার উদ্ভব ঘটে ।
আরোবলে রাখা ভালো আলপনা যদি শুধুমাত্র কামনার প্রতিচ্ছবি হত তবে যেমন তেমন করে আল্পনায় কামনার প্রতিরূপ দিলেই হত। কিন্তু মানুষ সেখানে তৃপ্তি পাচ্ছে না যতক্ষণ পর্যন্ত নান্দনিকতা শিল্প সৌন্দর্যে দূষিত হচ্ছে ।যেখানে অন্নপ্রাশনের পিঁড়ি সেখানে শুধু অন্নের বাটিটি যেমন তেমন করে এঁকে দিল এই কামনা সফল হতে পারত কিন্তু তা নয়। মানুষ সেখানে অনেক লতাপাতা একে পিঁড়ি খানি কে সুন্দর করতে চেয়েছে, তাতে কাজের অতিরিক্ত অনেক কথাই প্রকাশিত। এখানেই নান্দনিকতার প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। ‘বঙ্গলক্ষীর ঝাঁপি’গ্রন্থে অমিয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন—"নিছক চিত্রাঙ্কন পারদর্শিতার দিক থেকে এ নকশাগুলির মূল্য কম নয়।পিটুলি গোলার দু-চারটি টানে যে কোনো জিনিসের সাদৃশ্য ফোটাতে যে কতখানি ক্ষমতার প্রয়োজন চিত্রকর মাত্রেই তা জানেন। এই দুরূহ কাজে বঙ্গললনা উত্তীর্ণ হয়েছেন সসম্মানে।”
আলপনার শিল্পবোধ আদিম সমাজ
থেকে আদিবাসী সমাজ হয়ে লোকসমাজে প্রবাহিত যা চিরন্তন।
এখান থেকে মনে করা যায় যে এর মধ্যে শুধু আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ নয় ,এর মধ্যে নান্দনিকতার প্রকাশ ও গুরুত্বপূর্ণ।
অবনীন্দ্রনাথ বলেছেন—“কল্পনার অবকাশ যেখানে সেখানেই ব্রতিনীর আলপনা নান্দনিকতা মন্ডিত হয়ে উঠেছে” (‘বাংলার ব্রত’) বলা যায় কমনা ও শিল্পবোধের
মধ্যেও নারী স্বাধীনতার প্রকাশ কোনও ভাবেই চাপা পড়েনি।
গ্রন্থসূত্র:-
ঠাকুর,অবনীন্দ্রনাথ-বাংলার ব্রত-বিশ্বভারতী,১৪০৭
অন্নপূর্ণা দেবী-মেয়েদের ব্রতকথা,সংকলিত,কলকাতা-১৯২৬
বসাক, শীলা - গ্রন্থঋণবাংলার ব্রত-পার্বণ,পুস্তক বিপনি-২০০৮
কিরণবালা দাসী- ব্রতকথা, কলকাতা-১৯১২
চক্রবর্তী, বরুণকুমার-লোকউৎসব ও লোকদেবতা প্রসঙ্গ,কলকাতা,১৯৮৪
চৌধুরী,দুলাল-বাংলার লোক-উৎসব,১৯৮৫
দে,বেলা-ব্রত ছড়া আলপনা,কলিকাতা পুস্তকালয়,১৯৬৫
বন্দ্যোপাধ্যায়,অমিয়কুমার-বঙ্গলক্ষ্মীর ঝাঁপি,১৩৮৬
মুখোপাধ্যায় ,আশুতোষ-মেয়েদের ব্রতকথা,পারুল,২০১৩
ভট্টাচার্য,বামনদেব- মেয়েদের ব্রতকথা,১৯৯৩
মিত্র,সনৎকুমার-মেয়েলি ব্রতবিষয়ে,১৯৯৫
মুর্শেদ,সরওয়ার-লোকসংস্কৃতি অন্বেষা,ঢাকা,২০১৪
সেনগুপ্ত,পল্লব-লোকসংস্কৃতি সীমানা ও স্বরূপ,১৯৯৫
ক্ষেত্র সমীক্ষা -
ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
=================================================
তারিখ-15/12/2020
কোন মন্তব্য নেই
ok